গেঁটেবাত (Gout) একটি সাধারণ কিন্তু যন্ত্রণাদায়ক বাতজনিত রোগ, যা মূলত শরীরে ইউরিক অ্যাসিড জমে যাওয়ার ফলে হয়ে থাকে। এটি সাধারণত পায়ের আঙুলের গাঁটে শুরু হয়, তবে শরীরের অন্যান্য জয়েন্টেও প্রভাব ফেলতে পারে। অপ্রতুল চিকিৎসার ফলে গেঁটেবাত দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবং জটিলতা বাড়াতে পারে। এই আর্টিকেলে আমরা গেঁটেবাতের লক্ষণ, কারণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
গেঁটেবাত কী
গেঁটেবাত হল এক ধরনের প্রদাহজনিত আর্থ্রাইটিস যা ইউরিক অ্যাসিড ক্রিস্টাল গাঁটে জমে গিয়ে ব্যথা ও ফোলা সৃষ্টি করে। এটি প্রধানত পুরুষদের বেশি দেখা যায়, তবে মহিলাদের মধ্যেও হতে পারে, বিশেষ করে মেনোপজের পর।
গেঁটেবাতের লক্ষণ
গেঁটেবাত (Gout) একটি ব্যথাযুক্ত বাতজনিত রোগ, যা শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের অতিরিক্ত পরিমাণ জমার কারণে হয়ে থাকে। এটি সাধারণত পায়ের বুড়ো আঙুলের গাঁটে বেশি দেখা যায়, তবে শরীরের অন্যান্য অস্থিসন্ধিতেও এ রোগ হতে পারে। গেঁটেবাতের লক্ষণ সাধারণত হঠাৎ করেই দেখা দেয় এবং মারাত্মক ব্যথার সৃষ্টি করে। আসুন বিস্তারিত জেনে নিই গেঁটেবাতের লক্ষণ সম্পর্কে—
গেঁটেবাতের প্রধান লক্ষণ:
১. হঠাৎ ও তীব্র ব্যথা
গেঁটেবাতের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো হঠাৎ তীব্র ব্যথা হওয়া। এটি সাধারণত রাতে বেশি অনুভূত হয় এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রচণ্ড ব্যথা দেখা দিতে পারে।
২. অস্থিসন্ধিতে ফোলা ও লালচে ভাব
গেঁটেবাত হলে আক্রান্ত গাঁটটি ফুলে যেতে পারে এবং লালচে বা গাঢ় বর্ণ ধারণ করতে পারে।
৩. তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও স্পর্শকাতরতা
গেঁটেবাতের ফলে আক্রান্ত অংশে গরম অনুভূত হয় এবং সামান্য ছোঁয়াতেই প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে।
৪. নড়াচড়ার সমস্যা
অস্থিসন্ধিতে প্রচণ্ড ব্যথা থাকায় স্বাভাবিকভাবে হাঁটা বা নড়াচড়া করা কঠিন হয়ে পড়ে।
৫. রাতে ব্যথা বৃদ্ধি
অনেক ক্ষেত্রে রাতে ব্যথা তীব্র হয়ে ওঠে, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
৬. দীর্ঘস্থায়ী হলে সংযোগস্থলে শক্তভাব
যদি গেঁটেবাত দীর্ঘদিন চলতে থাকে, তাহলে গাঁট শক্ত হয়ে যেতে পারে এবং স্বাভাবিক নড়াচড়া বাধাগ্রস্ত হয়।
গেঁটেবাতের লক্ষণ কখন গুরুতর হতে পারে
যদি ব্যথা এতটাই তীব্র হয় যে হাঁটা বা দাঁড়ানো অসম্ভব হয়ে পড়ে।
যদি একাধিক অস্থিসন্ধি একসঙ্গে আক্রান্ত হয়।
যদি সংক্রমণের মতো লক্ষণ দেখা দেয়, যেমন প্রচণ্ড ফোলা, অতিরিক্ত লালচে ভাব বা জ্বর।
গেঁটেবাতের কারণ
গেঁটেবাতের মূল কারণ হলো শরীরে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড জমা হওয়া। এটি রক্তের মধ্যে জমা হয়ে গেলে ক্রিস্টালের মতো হয়ে জয়েন্টে জমা হয় এবং ব্যথা সৃষ্টি করে।
গেঁটেবাতের সাধারণ কারণসমূহ:
গেঁটেবাত (Gout) হল একটি বেদনাদায়ক আর্থ্রাইটিস যা শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে ঘটে। এটি সাধারণত পায়ের আঙুলের সংযোগস্থলে (বিশেষ করে বুড়ো আঙুলে) শুরু হয়, তবে অন্যান্য জয়েন্টেও আক্রান্ত হতে পারে। নিচে গেঁটেবাতের প্রধান কারণগুলি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো—
১. শরীরে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড জমা হওয়া
গেঁটেবাত মূলত শরীরে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড জমে যাওয়ার কারণে হয়। ইউরিক অ্যাসিড হল শরীরে পিউরিন নামক যৌগের বিপাকের ফলে উৎপন্ন একটি উপজাত, যা সাধারণত প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। কিন্তু যখন শরীর প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ইউরিক অ্যাসিড তৈরি করে বা তা পর্যাপ্তভাবে বের করতে না পারে, তখন এটি জমা হয়ে ক্রিস্টাল (স্ফটিক) তৈরি করে এবং জয়েন্টে ব্যথা ও ফোলা সৃষ্টি করে।
২. খাদ্যাভ্যাস
নিম্নলিখিত খাবারগুলোতে উচ্চমাত্রার পিউরিন থাকে, যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে গেঁটেবাত সৃষ্টি করতে পারে—
-
লাল মাংস (গরু, খাসি)
-
সীফুড (সামুদ্রিক খাবার) যেমন চিংড়ি, কাঁকড়া, ঝিনুক
-
অর্গান মিট (যকৃত, কিডনি, মস্তিষ্ক)
-
অ্যালকোহল, বিশেষ করে বিয়ার
-
চিনিযুক্ত পানীয় (সফট ড্রিংক, ফ্রুক্টোজযুক্ত জুস)
৩. শারীরবৃত্তীয় কারণ
-
কিডনির কার্যকারিতা হ্রাস: কিডনি যদি সঠিকভাবে ইউরিক অ্যাসিড প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করতে না পারে, তবে তা রক্তে জমা হতে শুরু করে।
-
উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস: এই রোগগুলো ইউরিক অ্যাসিডের বিপাকে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
-
স্থূলতা (ওজনাধিক্য): বেশি ওজন হলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিড উৎপাদন বাড়তে পারে এবং কিডনির উপর চাপ পড়ে, যা ইউরিক অ্যাসিড নির্গমনে বাধা দেয়।
৪. জীবনযাত্রা ও অভ্যাস
-
দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা বা শারীরিক পরিশ্রম কম করা
-
পানির পরিমাণ কম গ্রহণ করা (ডিহাইড্রেশন)
-
অতিরিক্ত মানসিক চাপ
৫. ওষুধের প্রভাব
-
কিছু ওষুধ যেমন ডায়ুরেটিক্স (মূত্রবর্ধক ওষুধ) শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়াতে পারে।
-
অ্যাসপিরিন এবং কিছু ইমিউনোসপ্রেসিভ ড্রাগ ইউরিক অ্যাসিডের বিপাকে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
৬. বংশগত কারণ
গেঁটেবাত পারিবারিকভাবে ছড়াতে পারে। যদি পরিবারে কারও গেঁটেবাতের ইতিহাস থাকে, তাহলে ঝুঁকি বেড়ে যায়।
৭. অন্যান্য রোগের কারণে
-
-
থাইরয়েডের সমস্যা (হাইপোথাইরয়েডিজম)
-
সোরিয়াটিক আর্থ্রাইটিস
-
লিউকেমিয়া বা লিম্ফোমার মতো রক্তের রোগ
-
গেঁটেবাতের চিকিৎসা:
গেঁটেবাত নিরাময়ের জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে:
১. খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন
গেঁটেবাত প্রতিরোধের জন্য খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধিকারী খাবার এড়িয়ে চলুন (যেমন: লাল মাংস, সামুদ্রিক খাবার, অ্যালকোহল)
- বেশি পরিমাণ পানি পান করুন (প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস)
- সবজি ও ফলমূল বেশি খান
- কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার খান
২. ওষুধ
গেঁটেবাত নিরাময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু ওষুধ গ্রহণ করা যেতে পারে:
- নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ড্রাগস (NSAIDs): যেমন আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- কোলচিসিন (Colchicine): গেঁটেবাতের ব্যথা উপশমে কার্যকর।
- কর্টিকোস্টেরয়েড (Corticosteroids): যদি NSAIDs কার্যকর না হয়, তবে চিকিৎসক কর্টিকোস্টেরয়েড প্রেসক্রাইব করতে পারেন।
- ইউরিক অ্যাসিড কমানোর ওষুধ: যেমন অলোপুরিনল (Allopurinol) ও ফেবুক্সোস্ট্যাট (Febuxostat)।
৩. লাইফস্টাইল পরিবর্তন
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন
- ধূমপান ও অ্যালকোহল ত্যাগ করুন
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
৪. ঘরোয়া প্রতিকার
গেঁটেবাত উপশমে কিছু ঘরোয়া প্রতিকার কার্যকর হতে পারে:
- লেবু ও গরম পানি পান করুন: এটি শরীরের ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে।
- আদা ও হলুদের ব্যবহার: এগুলো প্রাকৃতিক প্রদাহনাশক হিসেবে কাজ করে।
- অ্যাপল সাইডার ভিনেগার: এটি ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
- চেরি ও কালো জাম খান: গবেষণায় দেখা গেছে, এগুলো ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।
গেঁটেবাত প্রতিরোধের উপায়:
১. সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করুন
কম পিউরিনযুক্ত খাবার খান:
উচ্চ পিউরিনযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন, কারণ পিউরিন ভেঙে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়। কম পিউরিনযুক্ত খাবার খান, যেমন—
দই, দুধ, ছানা (কম চর্বিযুক্ত)
ফলমূল (চেরি, আপেল, স্ট্রবেরি, কমলা)
শাকসবজি (লাউ, করলা, পালং শাক)
বাদাম ও অলিভ অয়েল
উচ্চ পিউরিনযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন:
লাল মাংস (গরু, খাসি)
সামুদ্রিক খাবার (চিংড়ি, কাঁকড়া, সার্ডিন মাছ)
প্রসেসড ফুড (ফাস্ট ফুড, মাংসজাত পণ্য)
অতিরিক্ত মিষ্টি ও ফ্রুক্টোজ সমৃদ্ধ পানীয়
২. প্রচুর পানি পান করুন
প্রতিদিন কমপক্ষে ২-৩ লিটার পানি পান করুন।
পানি শরীর থেকে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড বের করে দিতে সাহায্য করে।
গরম পানির সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে উপকার পাওয়া যায়।
৩. ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন
অতিরিক্ত ওজন গেঁটেবাতের ঝুঁকি বাড়ায়, তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
ফাস্ট ফুড ও ক্যালোরিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন, যেমন— হাঁটা, সাইক্লিং, যোগব্যায়াম।
৪. অ্যালকোহল ও সফট ড্রিংকস এড়িয়ে চলুন
অ্যালকোহল বিশেষ করে বিয়ার ও হুইস্কি ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধিতে সহায়ক।
ফ্রুক্টোজসমৃদ্ধ কোমল পানীয় ইউরিক অ্যাসিড বাড়াতে পারে, তাই এগুলো এড়িয়ে চলুন।
৫. নিয়মিত শরীরচর্চা করুন
প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটুন বা হালকা ব্যায়াম করুন।
দৌড়, সাইক্লিং বা যোগব্যায়াম গেঁটেবাত প্রতিরোধে সহায়ক।
৬. ডাক্তারের পরামর্শ নিন
যদি পরিবারের কারও গেঁটেবাতের ইতিহাস থাকে, তাহলে সময় থাকতে সচেতন হন।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান এবং ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা পর্যবেক্ষণ করুন।
কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
গেঁটেবাত একটি ব্যথাজনক সমস্যা, তবে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব যদি সময়মতো সচেতনতা অবলম্বন করা হয়। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং ওষুধের মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ করা যায়। গেঁটেবাতের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, যাতে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি এড়ানো যায়।
…………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
গেঁটেবাত: লক্ষণ, কারণ ও চিকিৎসা পরামর্শ (FAQ)
প্রশ্ন ১: গেঁটেবাত কি?
উত্তর:
গেঁটেবাত একটি বাতজনিত রোগ, যা ইউরিক অ্যাসিডের অতিরিক্ততা এবং এর ক্রিস্টাল জমে শরীরের গাঁটে প্রদাহ সৃষ্টি করে। এটি সাধারণত পায়ের আঙুলে হয়ে থাকে, তবে অন্যান্য জয়েন্টেও হতে পারে।
প্রশ্ন ২: গেঁটেবাতের প্রধান লক্ষণ কী কী?
উত্তর:
গেঁটেবাতের সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
-
গাঁটে তীব্র ব্যথা, বিশেষ করে রাতে
-
গাঁটে ফুলে ওঠা ও লালচে ভাব
-
গাঁটে তাপ অনুভূতি বা গরম ভাব
-
চলাফেরায় কষ্ট বা সমস্যা
-
কখনো কখনো জ্বর আসতে পারে
প্রশ্ন ৩: গেঁটেবাতের কারণ কী?
উত্তর:
গেঁটেবাত মূলত শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের অতিরিক্ত জমার কারণে হয়। ইউরিক অ্যাসিড বাড়ানোর কিছু কারণ হলো:
-
অতিরিক্ত পিউরিনযুক্ত খাবার খাওয়া: লাল মাংস, সামুদ্রিক মাছ, প্রসেসড খাবার
-
অ্যালকোহল ও কোমল পানীয়: বিশেষ করে বিয়ার এবং ফ্রুক্টোজ সমৃদ্ধ পানীয়
-
ওজন বৃদ্ধি: অতিরিক্ত ওজন গেঁটেবাতের ঝুঁকি বাড়ায়
-
জীবনযাত্রার সমস্যা: অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক অনুশীলন অভাব
-
বংশগত কারণ: যদি পরিবারের কারও গেঁটেবাত থাকে, তাহলে সেই ঝুঁকি বেড়ে যায়
প্রশ্ন ৪: গেঁটেবাতের চিকিৎসা কী?
উত্তর:
গেঁটেবাতের চিকিৎসা দুটি প্রধান ধাপে বিভক্ত:
-
ব্যথা ও প্রদাহ কমানো:
-
NSAIDs (যেমন, ইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রক্সেন)
-
কর্টিকোস্টেরয়েড (যেমন, প্রেডনিসোন)
-
কলচিসিন (Colchicine)
-
-
ইউরিক অ্যাসিড কমানোর চিকিৎসা:
-
অ্যালোপিউরিনল (Allopurinol)
-
ফেবুক্সোস্ট্যাট (Febuxostat)
-
প্রোবেনেসিড (Probenecid)
-
প্রশ্ন ৫: গেঁটেবাত প্রতিরোধে কী করণীয়?
উত্তর:
গেঁটেবাত প্রতিরোধে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়া জরুরি:
-
কম পিউরিনযুক্ত খাবার খাওয়া (ফলমূল, শাকসবজি, কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার)
-
পানি বেশি করে পান করা (প্রতিদিন ২-৩ লিটার)
-
অ্যালকোহল ও কোমল পানীয় পরিহার করা
-
ওজন নিয়ন্ত্রণ করা
-
নিয়মিত ব্যায়াম করা
প্রশ্ন ৬: গেঁটেবাত কি সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব?
উত্তর:
গেঁটেবাত সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করা সম্ভব নয়, তবে সঠিক চিকিৎসা, খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে এর লক্ষণ নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং নতুন আক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
প্রশ্ন ৭: গেঁটেবাতের ব্যথা তীব্র হলে কি করতে হবে?
উত্তর:
গেঁটেবাতের ব্যথা যদি তীব্র হয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। আপাতত:
-
পায়ের আঙুল বা আক্রান্ত জয়েন্টটিকে বিশ্রাম দিন
-
বরফ দিয়ে হালকা ম্যাসাজ করুন (২০-৩০ মিনিট)
-
NSAIDs বা কলচিসিন যেমন ওষুধ ব্যবহার করতে হতে পারে
-
গুরুতর ক্ষেত্রে কর্টিকোস্টেরয়েড ইনজেকশন বা ওষুধ গ্রহণ করুন
প্রশ্ন ৮: গেঁটেবাতের জন্য কোন খাদ্য এড়িয়ে চলা উচিত?
উত্তর:
গেঁটেবাতের জন্য উচ্চ পিউরিনযুক্ত খাবার যেমন:
-
লাল মাংস (গরু, খাসি)
-
সামুদ্রিক খাবার (চিংড়ি, কাঁকড়া)
-
অ্যালকোহল (বিশেষ করে বিয়ার)
-
কোমল পানীয় বা ফ্রুক্টোজ সমৃদ্ধ পানীয়
এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
প্রশ্ন ৯: গেঁটেবাতের চিকিৎসায় ঘরোয়া প্রতিকার কী কী?
উত্তর:
গেঁটেবাতের চিকিৎসায় কিছু ঘরোয়া প্রতিকারও সাহায্য করতে পারে:
-
গরম পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থানে স্নান
-
চেরি বা স্ট্রবেরি খাওয়া, কারণ এদের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে
-
লেবু ও মধু মিশ্রিত পানি পান করা
-
অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমানো এবং বিশ্রাম নেওয়া
No comment yet, add your voice below!