Skip to content
করলার উপকারিতা

তেতো হলেও করলা অমৃত: জানুন এর অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতা

করলা, বৈজ্ঞানিক নাম Momordica charantia, এক ধরনের তেতো স্বাদের সবজি যা স্বাস্থ্যগুণে ভরপুর। যদিও তেতো স্বাদের কারণে অনেকেই এটি খেতে পছন্দ করেন না, তবে এর স্বাস্থ্য উপকারিতা জানলে আপনি অবশ্যই এটি খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে চাইবেন। করলা শরীরকে ডিটক্সিফাই করে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

 

করলার পুষ্টিগুণ:

ভিটামিন ও খনিজ: করলায় রয়েছে ভিটামিন A, C, ও K, যা ত্বক, চোখ ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
ফাইবার: হজমশক্তি বাড়াতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে করলার ফাইবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা দেহের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
লো ক্যালোরি: করলা খুবই কম ক্যালোরিযুক্ত সবজি, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
আয়রন ও পটাসিয়াম: করলায় আয়রন ও পটাসিয়াম থাকে, যা রক্তস্বল্পতা দূর করে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্ক: করলায় থাকা ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্ক ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

 

করলার অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতা:

১. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

করলাকে “প্রাকৃতিক ইনসুলিন” বলা হয়। এতে উপস্থিত চ্যারেন্টিন ও পলিপেপটাইড-পি যৌগ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

কিভাবে করলা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে?

  • করলার নির্যাস ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়।
  • এটি লিভার থেকে গ্লুকোজ নিঃসরণ কমায়।
  • কোষে গ্লুকোজ গ্রহণের হার বাড়িয়ে দেয়।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য করলার রস বা সবজি হিসেবে গ্রহণ করা বিশেষ উপকারী।

২. হজমশক্তি উন্নত করে

করলাতে উপস্থিত ফাইবার হজমতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। এটি পাচক রসের ক্ষরণ বাড়ায়, ফলে খাবার ভালোভাবে হজম হয়।

৩. লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষা করে

করলা ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করে এবং লিভারকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এটি ফ্যাটি লিভার ও লিভারের প্রদাহ কমাতে কার্যকর।

৪. ওজন কমাতে সহায়ক

যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য করলা আদর্শ খাবার।

  • কম ক্যালরি: করলা অত্যন্ত কম ক্যালরিযুক্ত সবজি।
  • উচ্চ ফাইবার: এটি ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং অতিরিক্ত খাবার খাওয়া প্রতিরোধ করে।
  • ফ্যাট বার্ন: করলার উপাদান মেটাবলিজম বাড়িয়ে ফ্যাট বার্ন করতে সহায়তা করে।
৫. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

করলা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে, ফলে এটি উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। করলার পটাশিয়াম রক্তনালী শিথিল করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

করলায় থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, যা বিভিন্ন সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক।

৭. ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে

গবেষণায় দেখা গেছে করলা কিছু নির্দিষ্ট ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিকে বাধা দিতে পারে। বিশেষত স্তন ক্যান্সার ও প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার প্রতিরোধে করলা কার্যকর হতে পারে।

৮. ত্বকের জন্য উপকারী

করলা ত্বকের সমস্যা, যেমন ব্রণ ও একজিমা নিরাময়ে সহায়তা করে। করলার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বয়সের ছাপ প্রতিরোধে সহায়ক।

৯. চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়

করলায় উপস্থিত বিটা-ক্যারোটিন এবং ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী এবং রাতকানা প্রতিরোধে সাহায্য করে।

করলার ব্যবহার ও খাওয়ার উপায়:

 

করলার ব্যবহার
১. রান্নায় ব্যবহার

ভাজি: পাতলা করে কেটে সামান্য লবণ মাখিয়ে সরিষার তেলে ভাজা যায়।
ভর্তা: সিদ্ধ করে পেঁয়াজ-মরিচ দিয়ে মাখিয়ে ভর্তা তৈরি করা হয়।
তরকারি: আলু, ডাল বা শুঁটকি মাছের সঙ্গে রান্না করা যায়।
ভাজা বা পুর দেওয়া করলা: করলা কেটে তার ভেতর মশলাযুক্ত পুর দিয়ে ভাজা যায়।

২. রস তৈরি করে পান করা

করলার রস ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
১-২টি করলা ব্লেন্ড করে পানি ছেঁকে খাওয়া যায়।
এতে লেবুর রস বা মধু মিশিয়ে তেতো স্বাদ কিছুটা কমানো যায়।

৩. সালাদে ব্যবহার

কাঁচা করলা পাতলা করে কেটে সামান্য লবণ ও লেবুর রস দিয়ে সালাদ হিসেবে খাওয়া যায়।
এতে অন্যান্য সবজি বা শসাও যোগ করা যায়।

৪. আচার (পিকল) তৈরি করা

করলাকে মশলা, লবণ ও ভিনেগার মিশিয়ে আচার তৈরি করা যায়।
এটি দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায় এবং খেতে সুস্বাদু হয়।

৫. করলা চা (Bitter Gourd Tea)

শুকনো করলা টুকরো গরম পানিতে ভিজিয়ে করলা চা তৈরি করা হয়।
এটি ওজন কমানো ও ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে।

করলা খাওয়ার উপায়

১. কাঁচা করলা খাওয়া কি নিরাপদ?

কাঁচা করলা খাওয়া সম্ভব, তবে এটি খুব তেতো হওয়ায় অনেকে পছন্দ করেন না।
অতিরিক্ত তেতো স্বাদ কমাতে লবণ ও লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া যায়।
তবে গর্ভবতী ও শিশুদের জন্য কাঁচা করলা কম পরিমাণে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

২. করলার তেতো স্বাদ কমানোর উপায়

করলা কাটার পর লবণ মাখিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিলে তেতো ভাব কমে।
সিদ্ধ করে পানি ফেলে দিয়ে রান্না করলে তেতো স্বাদ কমে যায়।
নারকেল বা চিনির সাথে রান্না করলে স্বাদ আরও ভালো হয়।

৩. করলা কখন ও কতটুকু খাওয়া উচিত?

প্রতিদিন ৫০-১০০ গ্রাম করলা খাওয়া উপকারী।
সকালে খালি পেটে করলার রস পান করা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো।
অতিরিক্ত করলা খেলে পেট ব্যথা বা ডায়রিয়া হতে পারে, তাই পরিমাণ অনুযায়ী খাওয়া উচিত।

করলা খাওয়ার সময় সতর্কতা

করলা অত্যন্ত পুষ্টিকর ও উপকারী হলেও, কিছু ক্ষেত্রে এটি অতিরিক্ত খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাই করলা খাওয়ার আগে কিছু সতর্কতা মেনে চলা জরুরি।

১. অতিরিক্ত করলা খাওয়া এড়িয়ে চলুন

অতিরিক্ত করলা খেলে পেট ব্যথা, ডায়রিয়া ও গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।
বিশেষ করে কাঁচা করলা বা করলার রস অতিরিক্ত খেলে পাচনতন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

২. ডায়াবেটিস রোগীরা সতর্ক থাকুন

করলা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী
তবে, ইনসুলিন গ্রহণকারী বা ডায়াবেটিসের ওষুধ খাওয়া ব্যক্তিদের জন্য এটি রক্তে শর্করা অতিরিক্ত কমিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়া তৈরি করতে পারে।

৩. গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য সতর্কতা

করলায় কিছু রাসায়নিক উপাদান রয়েছে যা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
গর্ভবতী নারীদের করলার রস বা অতিরিক্ত করলা খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত
স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য করলার প্রভাব সম্পর্কে পর্যাপ্ত গবেষণা নেই, তাই অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়

৪. রক্তচাপ কমিয়ে দিতে পারে

করলা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে, যা উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের জন্য ভালো।
তবে, যদি কেউ রক্তচাপের ওষুধ গ্রহণ করেন, তাহলে করলা অতিরিক্ত খেলে রক্তচাপ খুব কমে যেতে পারে

৫. অস্ত্রোপচারের (সার্জারি) আগে করলা এড়িয়ে চলুন

করলা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরিবর্তন করতে পারে, যা অস্ত্রোপচারের সময় জটিলতা তৈরি করতে পারে।
অস্ত্রোপচারের কমপক্ষে দুই সপ্তাহ আগে করলা খাওয়া বন্ধ করা উচিত

৬. কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করতে পারে

করলা কিছু ওষুধের কার্যকারিতা পরিবর্তন করতে পারে, বিশেষ করে ডায়াবেটিস, রক্তচাপ ও অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট (রক্ত পাতলা করা) ওষুধ
যদি নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ করেন, তাহলে করলা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত

বিশেষজ্ঞদের মতামত:

করলা (Bitter Gourd) পুষ্টিগুণ ও ওষধি গুণে ভরপুর একটি সবজি। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, পুষ্টিবিদ ও গবেষকরা করলার উপকারিতা সম্পর্কে নানা গবেষণা করেছেন এবং একে অত্যন্ত উপকারী সবজি হিসেবে অভিহিত করেছেন। আসুন, করলা নিয়ে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের মতামত দেখে নেওয়া যাক—

১. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে করলার ভূমিকা

American Diabetes Association (ADA) জানায়, করলা রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে, বিশেষ করে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য।
Indian Journal of Medical Research-এর এক গবেষণায় বলা হয়, করলায় থাকা চরান্তিন ও পলিপেপটাইড-পি ইনসুলিনের মতো কাজ করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: করলার রস প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর হতে পারে, তবে ওষুধের বিকল্প নয়।

২. ওজন কমানো ও হজম শক্তি বৃদ্ধিতে করলা

National Institute of Nutrition (NIN), India-এর মতে, করলা কম ক্যালোরিযুক্ত এবং ফাইবারসমৃদ্ধ হওয়ায় ওজন কমাতে সাহায্য করে।
Journal of Nutrition & Metabolism-এ প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, করলা চর্বি ভাঙতে সাহায্য করে এবং বিপাক হার বৃদ্ধি করে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: করলার চা বা রস নিয়মিত পান করলে ওজন কমানো সহজ হতে পারে।

৩. লিভার ডিটক্স ও করলার উপকারিতা

Asian Pacific Journal of Tropical Medicine-এর গবেষণায় বলা হয়, করলা লিভারকে ডিটক্সিফাই করতে সহায়ক এবং ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কমাতে পারে।
Dr. Andrew Weil, একজন প্রখ্যাত চিকিৎসক ও লেখক, করলাকে লিভারের জন্য “প্রাকৃতিক টনিক” হিসেবে অভিহিত করেছেন।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: নিয়মিত করলার রস পান করলে লিভারের কার্যকারিতা উন্নত হয়।

৪. ক্যান্সার প্রতিরোধে করলার ভূমিকা

Journal of Ethnopharmacology-এর এক গবেষণায় বলা হয়, করলায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিক্যাল স্তন, কোলন ও প্রোস্টেট ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কার্যকর।
Dr. Frank Shallenberger, একজন ক্যান্সার গবেষক, করলার নির্যাসকে “প্রাকৃতিক ক্যান্সার বিরোধী উপাদান” হিসেবে অভিহিত করেছেন।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: করলার নির্যাস বা চা নিয়মিত খেলে ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধির ঝুঁকি কমতে পারে।

৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে করলা

Harvard School of Public Health-এর গবেষণায় বলা হয়, করলায় থাকা ভিটামিন C ও ফ্ল্যাভোনয়েড শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
Dr. Josh Axe, একজন স্বনামধন্য পুষ্টিবিদ, করলাকে “একটি শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধী সবজি” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: নিয়মিত করলা খেলে ঠান্ডা, ফ্লু ও অন্যান্য সংক্রমণ থেকে শরীর সুরক্ষিত থাকে।

৬. করলার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা

Mayo Clinic-এর চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত করলা খেলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তে শর্করা অত্যধিক কমে যাওয়া), পেটের সমস্যা ও নিম্ন রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
World Health Organization (WHO) গর্ভবতী নারীদের করলার অতিরিক্ত গ্রহণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: করলা খাওয়ার পর যদি শরীরে কোনো অস্বস্তি দেখা দেয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

করলা তেতো হলেও এটি প্রকৃতির এক আশীর্বাদস্বরূপ সবজি। এটি নিয়মিত গ্রহণ করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, হজমশক্তি উন্নতকরণ, ওজন কমানো এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির মতো অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়। তাই, করলাকে আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন এবং সুস্থ জীবনযাপন করুন।

…………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

 

তেতো হলেও করলা অমৃত: জানুন এর অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতা (FAQ)

করলা তেতো হলেও, এর স্বাস্থ্য উপকারিতা অগণিত। অনেকেই করলা খেতে পছন্দ করেন না, তবে বিশেষজ্ঞরা একে “প্রাকৃতিক ওষুধ” বলে থাকেন। নিচে করলা নিয়ে সাধারণ কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো—

১. করলার পুষ্টিগুণ কী কী?

করলায় রয়েছে ভিটামিন C, ভিটামিন A, ফাইবার, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম
এতে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিক্যাল রয়েছে, যা বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

২. করলা কি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উ?

হ্যাঁ! করলায় থাকা চরান্তিন ও পলিপেপটাইড-পি রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী।
সতর্কতা: যারা ইনসুলিন বা ডায়াবেটিসের ওষুধ খান, তাদের বেশি করলা খেলে রক্তে শর্করা অতিরিক্ত কমে যেতে পারে।

৩. করলা কি ওজন কমাতে সাহায্য করে?

হ্যাঁ! করলা কম ক্যালোরিযুক্ত ও ফাইবারসমৃদ্ধ, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
এটি বিপাক হার বৃদ্ধি করে ও চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে।
করলার রস বা চা পান করলে ওজন কমানোর প্রক্রিয়া আরও দ্রুত হয়।

৪. করলা লিভারের জন্য কেমন?

করলা লিভারকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে।
এটি ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধ করতে পারে।
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে করলার রস পান করলে লিভার পরিষ্কার থাকে।

৫. করলা কি ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে?

করলায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিক্যাল ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে পারে।
স্তন, কোলন ও প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে করলা কতটা কার্যকর?

করলায় রয়েছে ভিটামিন C, ফ্ল্যাভোনয়েড ও ক্যারোটিনয়েড, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
এটি ঠান্ডা, ফ্লু ও সংক্রমণের বিরুদ্ধে কার্যকর।

৭. করলা কি গর্ভবতী নারীদের জন্য নিরাপদ?

গর্ভবতী নারীদের করলার অতিরিক্ত গ্রহণ বর্জন করা উচিত
করলায় কিছু যৌগ রয়েছে, যা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

৮. করলা খেলে কি হজমের সমস্যা হয়?

করলা হজমে সাহায্য করে, তবে অতিরিক্ত খেলে পেট ব্যথা, গ্যাস ও ডায়রিয়া হতে পারে।
করলা পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।

৯. করলার তেতো স্বাদ কমানোর উপায় কী?

করলা কাটার পর লবণ মাখিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে দিলে তেতো ভাব কমে।
সিদ্ধ করে পানি ফেলে দিলে তেতো স্বাদ কমে যায়।
লেবুর রস বা নারকেল দিয়ে রান্না করলে স্বাদ ভালো হয়।

১০. করলার রস কীভাবে বানাবেন?

১-২টি করলা কেটে ছোট টুকরো করুন।
ব্লেন্ডারে পানি দিয়ে ব্লেন্ড করুন।
ছেঁকে রস আলাদা করুন।
লেবুর রস বা মধু মিশিয়ে পান করুন।

No comment yet, add your voice below!


Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *