Skip to content
স্তন স্বাস্থ্য

মেয়েদের স্তন স্বাস্থ্য: ক্যান্সার প্রতিরোধে করণীয়

স্তন ক্যান্সার আজকের দিনে নারীদের মধ্যে অন্যতম ভয়াবহ একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর লাখ লাখ নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং অনেক সময় দেরিতে রোগ নির্ণয়ের কারণে জীবনহানির ঘটনাও ঘটে। তবে সময়মতো সচেতনতা, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।

স্তন ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণসমূহ:

১. স্তনে বা বগলের কাছে অস্বাভাবিক চাকা বা গাঁট অনুভব করা

স্তন ক্যান্সারের সবচেয়ে সাধারণ এবং প্রথম লক্ষণ হলো স্তনে বা বগলের কাছে শক্ত বা চ্যাপ্টা কোনো গাঁট বা ফোলাভাব অনুভব করা। সাধারণত এই গাঁট ব্যথাহীন হয়, তবে সময়ের সাথে সাথে এর আকার বৃদ্ধি পেতে পারে। নিজেরা নিয়মিত স্তন পরীক্ষা করলে এই পরিবর্তন সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব।

২. স্তনের আকার বা আকৃতির পরিবর্তন

যদি স্তনের আকার বা আকৃতিতে কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়, যেমন একটি স্তন হঠাৎ করে বড় বা ছোট হয়ে যাওয়া, ফোলা বা সঙ্কুচিত হওয়া, তবে তা স্তন ক্যান্সারের ইঙ্গিত হতে পারে। বিশেষ করে যদি একদিকে বেশি পরিবর্তন দেখা দেয়, তবে তা অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত।

৩. স্তনের ত্বকে পরিবর্তন

ত্বকের টান পড়া, কুঁচকে যাওয়া, কমলা খোসার মতো চেহারা ধারণ করা (Peau d’Orange Appearance) স্তন ক্যান্সারের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হতে পারে। এ ধরনের পরিবর্তন স্তনের ভেতরের টিস্যুতে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধির ফলে ঘটে থাকে।

৪. স্তনবৃন্ত (নিপল) এর পরিবর্তন

নিপলের আকৃতি পরিবর্তন, ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া (Inversion), অথবা নিপলের আশপাশের অংশ লালচে বা মোটা হয়ে যাওয়া স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। যদি হঠাৎ করে নিপলের দিক পরিবর্তন হয় বা তা অস্বাভাবিকভাবে দেখতে লাগে, তবে তা অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

৫. নিপল থেকে অস্বাভাবিক তরল নিঃসরণ

নিপল থেকে রক্তমিশ্রিত বা হলুদাভ, সবুজাভ, দুধের মতো অথবা পানির মতো তরল নিঃসরণ স্তন ক্যান্সারের ইঙ্গিত দিতে পারে। যদিও সব নিঃসরণই ক্যান্সারের লক্ষণ নয়, তবে অস্বাভাবিক নিঃসরণ দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তার দেখানো উচিত।

৬. স্তনে বা নিপলের চারপাশে ব্যথা বা অস্বস্তি

স্তনের নির্দিষ্ট কোনো স্থানে বা নিপলের আশেপাশে অস্বাভাবিক ব্যথা, জ্বালা বা অস্বস্তি অনুভূত হলে তা সতর্কতা অবলম্বনের কারণ হতে পারে। যদিও সাধারণত স্তন ক্যান্সারের শুরুতে ব্যথা হয় না, তবে কোনো ব্যতিক্রমী ব্যথা থাকলে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা উচিত।

৭. বগল বা কাঁধের কাছে ফোলাভাব বা ব্যথা

ক্যান্সার কোষ যখন লিম্ফ নোডে (lymph nodes) ছড়িয়ে পড়ে, তখন বগলের নিচে বা কাঁধের কাছে ফোলাভাব বা ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এটা প্রায়ই প্রথমদিকে সামান্য থাকে, কিন্তু ধীরে ধীরে প্রকট হতে পারে।

৮. ওজন হ্রাস বা ক্ষুধামান্দ্য

ক্যান্সারের ক্ষেত্রে শরীরের ওজন হঠাৎ কমে যাওয়া বা অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়া খুবই সাধারণ লক্ষণ। যখন দেহের কোষগুলো ক্যান্সার দ্বারা আক্রান্ত হয়, তখন শরীরের স্বাভাবিক শক্তি কমতে থাকে এবং খাবারের প্রতি অনীহা দেখা দিতে পারে।

স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকির কারণসমূহ:

স্তন ক্যান্সার যেকোনো নারীর (কখনো কখনো পুরুষেরও) হতে পারে, তবে কিছু নির্দিষ্ট কারণ এই রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এই কারণগুলো জানা থাকলে আমরা সচেতন হতে পারি এবং প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিতে পারি। আসুন, স্তন ক্যান্সারের প্রধান ঝুঁকির কারণগুলো একে একে জেনে নিই।

১. বয়স

বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। বিশেষ করে ৫০ বছরের পর নারীদের এই ঝুঁকি বেশি থাকে।

২. পারিবারিক ইতিহাস (Family History)

পরিবারে যদি মা, বোন, কন্যা বা নিকটাত্মীয় কারো স্তন বা ডিম্বাশয়ের (ovarian) ক্যান্সার থেকে থাকে, তাহলে অন্য সদস্যের স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

৩. বংশগত জেনেটিক মিউটেশন

বিশেষ কিছু জেন (যেমন BRCA1 ও BRCA2) মিউটেশন থাকলে স্তন ও ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক গুণ বেড়ে যায়।

৪. ব্যক্তিগত ক্যান্সার ইতিহাস

যদি আগে স্তনে ক্যান্সার হয়ে থাকে বা কিছু নির্দিষ্ট অস্বাভাবিক কোষের বৃদ্ধি (যেমন DCIS বা LCIS) ধরা পড়ে, তবে ভবিষ্যতে স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

৫. স্তন টিস্যুর ঘনত্ব

ঘন স্তন টিস্যু (dense breast tissue) থাকলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং ক্যান্সার সনাক্ত করাও কঠিন হয়ে যায়।

৬. কিছু হরমোনাল কারণ
  • মাসিক দ্রুত শুরু হওয়া (১২ বছরের আগে) অথবা দেরিতে মেনোপজ হওয়া (৫৫ বছরের পরে) স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

  • দীর্ঘমেয়াদী হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (HRT) বা গর্ভনিরোধক ওষুধের ব্যবহারও ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

৭. প্রথম সন্তান জন্মের বয়স

যারা ৩০ বছরের পরে প্রথম সন্তান জন্ম দেন অথবা সন্তান জন্ম না দিয়ে থাকেন, তাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি।

৮. বুকের দুধ না খাওয়ানো

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সন্তানদের বুকের দুধ খাওয়ান না, তাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কিছুটা বেশি হতে পারে।

৯. জীবনধারা ও পরিবেশগত কারণ
  • অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা বিশেষ করে মেনোপজের পর।

  • অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন।

  • শারীরিক ব্যায়ামের অভাব।

  • ধূমপান।

  • দীর্ঘদিনের উচ্চ মাত্রায় রেডিয়েশন এক্সপোজার (যেমন ছেলেবেলায় ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য রেডিয়েশন থেরাপি গ্রহণ করা)।

১০. খাদ্যাভ্যাস

ফাস্টফুড, অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার, কম ফলমূল ও সবজি খাওয়া ইত্যাদি স্বাস্থ্যহানিকর খাদ্যাভ্যাস স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে করণীয়:

১. স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন

স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন বিশেষ করে মেনোপজের পর স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তাই সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

২. নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করুন

প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট মাঝারি ধরনের ব্যায়াম (যেমন হাঁটা, সাইক্লিং, সাঁতার) স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। একটানা বসে থাকা জীবনধারা এড়িয়ে চলুন।

৩. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন
  • প্রচুর সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, বাদাম এবং আঁশযুক্ত খাবার খান।

  • অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত, প্রক্রিয়াজাত ও ফাস্টফুডজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।

  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার (যেমন বেরি, টমেটো, ব্রকোলি) বেশি করে খান।

৪. অ্যালকোহল ও ধূমপান থেকে বিরত থাকুন

অ্যালকোহল এবং ধূমপান সরাসরি স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এই অভ্যাসগুলো সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলাই সবচেয়ে নিরাপদ পথ।

৫. সন্তানদের বুকের দুধ খাওয়ান

গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘ সময় ধরে সন্তানদের বুকের দুধ খাওয়ানো স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এটি মা ও শিশুর উভয়ের জন্যই উপকারী।

৬. হরমোন থেরাপির (HRT) প্রয়োগ সম্পর্কে সচেতন থাকুন

মেনোপজের পরে দীর্ঘমেয়াদী হরমোন থেরাপি স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিকল্প চিকিৎসা গ্রহণ করুন।

৭. নিয়মিত স্তন পরীক্ষা করুন (Self Breast Exam)

নিজের স্তন নিয়মিত পরীক্ষা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস। মাসিক শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ পরে নরম স্তনের সময়ে পরীক্ষা করা উত্তম। কোনো অস্বাভাবিক গাঁট, ফোলাভাব বা পরিবর্তন অনুভব করলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৮. প্রয়োজনীয় স্ক্রিনিং ও ম্যামোগ্রাফি করান

নিয়মিত স্ক্রিনিং যেমন ম্যামোগ্রাফি, আল্ট্রাসোনোগ্রাফি বা ক্লিনিক্যাল ব্রেস্ট এক্সামিনেশন করানো স্তন ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করতে সাহায্য করে। বয়স, পারিবারিক ইতিহাস বা ঝুঁকির উপর ভিত্তি করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্ক্রিনিং করানো উচিত।

৯. মানসিক চাপ কমান

দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ শরীরের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল করে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। মেডিটেশন, যোগব্যায়াম, হাঁটাচলা বা নিজের পছন্দের কাজের মাধ্যমে মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন।

১০. বংশগত ঝুঁকি থাকলে বিশেষ পরামর্শ নিন

যদি পরিবারের কারো স্তন বা ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ইতিহাস থাকে, তাহলে জেনেটিক কাউন্সেলিং ও পরীক্ষার (BRCA1, BRCA2 মিউটেশন টেস্ট) মাধ্যমে ঝুঁকি নির্ধারণ করা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করণীয় নির্ধারণ করা উচিত।

স্তন ক্যান্সারের প্রাথমিক ধাপে চিকিৎসা:

  • অস্ত্রোপচার (Lumpectomy বা Mastectomy)

  • কেমোথেরাপি

  • রেডিয়েশন থেরাপি

  • হরমোন থেরাপি

  • টার্গেটেড থেরাপি

স্তন স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি:

সবার মাঝে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি যাতে নারী সমাজ প্রাথমিক পর্যায়ে নিজে থেকেই ঝুঁকি চিহ্নিত করতে পারে। কিছু কার্যকর উদ্যোগ:

  • স্কুল, কলেজে সচেতনতামূলক কর্মসূচি

  • অনলাইন ও অফলাইন ক্যাম্পেইন

  • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ক্যাম্প

স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা:

১. স্তনে চাকা মানেই ক্যান্সার: সব চাকা ক্যান্সার নয়, তবে চিকিৎসক দেখানো জরুরি।
২. পরিবারে ক্যান্সার না থাকলে ঝুঁকি নেই: ৮০%-এর বেশি ক্যান্সার আক্রান্তের পরিবারে কোনো ইতিহাস থাকে না।
৩. যুবতীদের স্তন ক্যান্সার হয় না: কম বয়সীদেরও স্তন ক্যান্সার হতে পারে।

স্তন স্বাস্থ্য রক্ষা ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন সচেতনতা, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ। নিজেদের প্রতি যত্নবান হলে স্তন ক্যান্সারের ভয় অনেকটাই কমানো সম্ভব। আজই শুরু করুন নিজের যত্ন নেওয়া এবং অন্যদের সচেতন করা।

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

মেয়েদের স্তন স্বাস্থ্য ও ক্যান্সার প্রতিরোধে করণীয়: (FAQ)

প্রশ্ন ১: মেয়েদের স্তন স্বাস্থ্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর:
স্তন স্বাস্থ্য রক্ষা করা মেয়েদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ স্তনের যেকোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন যেমন গাঁট, ফোলাভাব, ব্যথা বা ত্বকের পরিবর্তন গুরুতর সমস্যা, এমনকি স্তন ক্যান্সারের পূর্বাভাস হতে পারে। সচেতনতা এবং নিয়মিত পরীক্ষা স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ ও দ্রুত চিকিৎসার জন্য জরুরি।

প্রশ্ন ২: স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে কোন কোন জীবনধারা পরিবর্তন জরুরি?

উত্তর:

  • স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা

  • প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা

  • স্বাস্থ্যকর খাবার (শাকসবজি, ফলমূল) খাওয়া

  • অ্যালকোহল ও ধূমপান পরিহার করা

  • মানসিক চাপ কমানো

  • সন্তানের বুকের দুধ খাওয়ানো

  • হরমোন থেরাপির ব্যবহার চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সীমিত করা

প্রশ্ন ৩: কীভাবে স্তনের নিয়মিত স্ব-পরীক্ষা (Self-Examination) করতে হয়?

উত্তর:

  • মাসিক শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ পরে নিজে নিজে স্তন পরীক্ষা করা সবচেয়ে ভালো।

  • আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে, হাত উপরে তুলে স্তনের আকার বা ত্বকের কোনো পরিবর্তন আছে কিনা লক্ষ্য করুন।

  • আঙ্গুলের সাহায্যে হালকা চাপ দিয়ে স্তনের পুরোটা ভালো করে অনুভব করুন।

  • কোনো অস্বাভাবিক গাঁট, শক্ত ভাব বা ব্যথা অনুভব করলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

প্রশ্ন ৪: কখন স্তন ক্যান্সারের স্ক্রিনিং (ম্যামোগ্রাফি) করা উচিত?

উত্তর:

  • সাধারণত ৪০ বছর বয়সের পর থেকে প্রতি ১-২ বছরে ম্যামোগ্রাফি করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

  • তবে পারিবারিক ইতিহাস বা উচ্চ ঝুঁকি থাকলে আরও আগে স্ক্রিনিং শুরু করা যেতে পারে।

  • চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যক্তিগত ঝুঁকি অনুযায়ী স্ক্রিনিংয়ের সময় নির্ধারণ করা উচিত।

প্রশ্ন ৫: পারিবারিক ইতিহাস থাকলে কী বাড়তি সতর্কতা নেওয়া দরকার?

উত্তর:
হ্যাঁ। যদি পরিবারের নিকট আত্মীয়ের স্তন বা ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ইতিহাস থাকে, তাহলে:

  • জেনেটিক কাউন্সেলিং ও প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করান (যেমন BRCA1, BRCA2)।

  • নিয়মিত স্ক্রিনিং করান।

  • চিকিৎসকের পরামর্শে বিশেষ পর্যবেক্ষণ বা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

প্রশ্ন ৬: বুকের দুধ খাওয়ানো কি স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক?

উত্তর:
হ্যাঁ। সন্তানের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে বুকের দুধ খাওয়ানো মায়ের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কিছুটা কমাতে সাহায্য করে। এটি স্তনের কোষের পরিবর্তন কমায় এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে।

প্রশ্ন ৭: খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্ভব কি?

উত্তর:
খাদ্যাভ্যাস সরাসরি ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে না পারলেও ঝুঁকি অনেকাংশে কমাতে পারে।

  • বেশি শাকসবজি, ফলমূল এবং আঁশযুক্ত খাবার খান।

  • কম চর্বিযুক্ত, কম প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ করুন।

  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার (যেমন বেরি, টমেটো) বেশি খাওয়া উচিত।

প্রশ্ন ৮: স্তন ক্যান্সারের কোনো লক্ষণ দেখা গেলে কী করণীয়?

উত্তর:

  • দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

  • প্রয়োজনে আল্ট্রাসনোগ্রাফি, ম্যামোগ্রাফি বা বায়োপসি করতে হতে পারে।

  • চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নিন।

No comment yet, add your voice below!


Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *