Skip to content

শীতকালীন চর্মরোগ: প্রতিরোধ এবং ঘরোয়া সমাধান

শীতকাল বছরের একটি এমন সময়, যখন ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। শীতের শুষ্ক বাতাস এবং কম আর্দ্রতা ত্বকের জন্য বেশ ক্ষতিকর হতে পারে। “শীতকালীন চর্মরোগ: প্রতিরোধ এবং ঘরোয়া সমাধান” বিষয়ে সচেতন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ব্লগে আমরা শীতকালে সাধারণত দেখা দেওয়া ত্বকের সমস্যাগুলি, সেগুলির প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ এবং ঘরোয়া সমাধান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

শীতকালে চর্মরোগের সাধারণ লক্ষণ

শীতকালে চর্মরোগের সমস্যাগুলি খুব সাধারণ। ঠান্ডা আবহাওয়া, শুষ্ক বাতাস এবং ত্বকের আর্দ্রতার অভাবের কারণে এই সময়ে বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিচে শীতকালে চর্মরোগের সাধারণ লক্ষণ ও কারণগুলি বিস্তারিত দেওয়া হলো:

  1. ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া
    • ত্বক রুক্ষ ও খসখসে হয়ে যায়।
    • ত্বকে টান টান ভাব অনুভূত হয়।
    • ত্বকের উপর সাদা বা মৃত কোষের স্তর জমে যায়।
  2. চুলকানি (ইচিং)
    • শুষ্ক ত্বকের কারণে চুলকানি হতে পারে।
    • অতিরিক্ত চুলকানোর ফলে ত্বক লাল হয়ে যেতে পারে বা ক্ষত হতে পারে।
  3. ত্বকের ফাটল (Cracked Skin)
    • বিশেষ করে পা, হাত, ঠোঁট ও আঙ্গুলের ত্বকে ফাটল দেখা দেয়।
    • কখনও কখনও ত্বকের ফাটল থেকে রক্তপাত হতে পারে।
  4. একজিমা (Eczema)
    • শীতে একজিমার সমস্যা বাড়তে পারে।
    • ত্বকে লালচে বা ধূসর রঙের চিহ্ন, শুষ্কতা এবং চুলকানি দেখা দেয়।
  5. ঠোঁট ফাটা
    • শীতে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে ফেটে যায়।
    • ঠোঁটের কোণে ক্ষত বা ব্যথা হতে পারে।
  6. সোরিয়াসিস (Psoriasis)
    • এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ত্বকের রোগ যা শীতে বেড়ে যেতে পারে।
    • ত্বকের ওপর রুপালি আঁশের মতো স্তর দেখা দেয়।
  7. চামড়ার অ্যালার্জি
    • ঠান্ডা আবহাওয়া এবং কিছু উষ্ণ পোশাকের কারণে ত্বকে অ্যালার্জির মতো প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
    • লালচে ফোলা ফোলা ভাব দেখা দিতে পারে।
  8. ফ্রস্টবাইট (Frostbite)
    • অতিরিক্ত ঠান্ডার ফলে ত্বকের কিছু অংশ জমে গিয়ে কালচে বা সাদা হয়ে যেতে পারে।

 

প্রতিকার এবং যত্নের টিপস

  1. ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন
    • ত্বক ধোয়ার পরে তৎক্ষণাৎ ময়েশ্চারাইজার লাগান।
    • ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
  2. ঠোঁটের যত্ন নিন
    • ঠোঁটে লিপ বাম বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন।
  3. হালকা গরম পানিতে গোসল করুন
    • অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল এড়িয়ে চলুন।
  4. সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন
    • শীতকালেও সূর্যের আলো থেকে ত্বক রক্ষা করতে সানস্ক্রিন লাগান।
  5. শুষ্ক পরিবেশ এড়িয়ে চলুন
    • রুম হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করে ঘরের বাতাসে আর্দ্রতা বজায় রাখুন।
  6. সুতি কাপড় পরুন
    • আরামদায়ক এবং নরম কাপড় পরিধান করুন, যা ত্বকে অ্যালার্জির সমস্যা সৃষ্টি করবে না।

শীতকালীন চর্মরোগের কারণ:

শীতকালীন চর্মরোগের কারণগুলো প্রধানত ত্বকের শুষ্কতা এবং আবহাওয়ার পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত। শীতকালে ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা কমে যায়, যা বিভিন্ন চর্মরোগের সৃষ্টি করে। নিচে শীতকালীন চর্মরোগের কারণগুলো বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো:

১. আর্দ্রতার অভাব
  • শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
  • এই কম আর্দ্রতার কারণে ত্বকের উপরের স্তরের আর্দ্রতা দ্রুত হারিয়ে যায়।
  • ত্বকের শুষ্কতা এবং ফাটল এই কারণেই বেশি দেখা দেয়।
২. ঠান্ডা বাতাস
  • শীতকালে ঠান্ডা এবং শুষ্ক বাতাস ত্বকের আর্দ্রতা শুষে নেয়।
  • ঠান্ডা বাতাস ত্বকের প্রাকৃতিক সুরক্ষা স্তর (Protective Layer) দুর্বল করে দেয়, ফলে ত্বক শুষ্ক, রুক্ষ এবং সংবেদনশীল হয়ে পড়ে।
৩. গরম পানিতে গোসল
  • শীতকালে মানুষ সাধারণত গরম পানিতে গোসল করতে বেশি পছন্দ করে।
  • বেশি সময় ধরে বা খুব গরম পানিতে গোসল করার ফলে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল (Sebum) ধুয়ে যায়।
  • প্রাকৃতিক তেল হারালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় এবং চুলকানি বা ফাটল দেখা দেয়।
৪. ত্বকের প্রাকৃতিক তেলের ঘাটতি
  • শীতকালে ত্বকের Sebaceous Glands (তেল উৎপাদনকারী গ্রন্থি) কম কার্যকর হয়।
  • প্রাকৃতিক তেলের ঘাটতির কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় এবং চর্মরোগের ঝুঁকি বাড়ে।
৫. গরম ঘরের পরিবেশ
  • শীত থেকে বাঁচতে ঘরের হিটার বা রুম হিটার ব্যবহৃত হয়।
  • গরম ঘরের শুষ্ক পরিবেশ ত্বকের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয় এবং শুষ্ক ত্বকের সমস্যা বৃদ্ধি করে।
৬. প্রতিরোধমূলক ত্বকচর্চার অভাব
  • অনেকেই শীতে ত্বকের সঠিক যত্ন নেন না, যেমন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করা।
  • এ কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় এবং বিভিন্ন চর্মরোগ দেখা দেয়।
৭. ঠাণ্ডা এবং শুষ্ক পোশাক
  • উল বা স্যাঁতসেঁতে পোশাক ত্বকে ঘর্ষণ বা অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে।
  • এর ফলে র‍্যাশ বা চুলকানির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৮. ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে যাওয়া
  • শীতে অনেকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে।
  • এটি ত্বকের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়, যেমন ফাঙ্গাল ইনফেকশন বা ভাইরাসজনিত চর্মরোগ।
৯. সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব (UV Ray)
  • শীতকালেও সূর্যের UV রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।
  • UV রশ্মি ত্বক শুষ্ক করার পাশাপাশি সোরিয়াসিস বা একজিমার মতো সমস্যাকে তীব্র করতে পারে।
১০. জলের ঘাটতি
  • শীতকালে ঠান্ডার কারণে অনেকে পর্যাপ্ত পানি পান করেন না।
  • শরীরে পানির অভাব হলে ত্বক অভ্যন্তরীণভাবে শুষ্ক হয়ে যায়।
১১. ফ্রস্টবাইট (Frostbite)
  • অতিরিক্ত ঠান্ডা অঞ্চলে দীর্ঘসময় কাটালে ত্বকের কোষে রক্তপ্রবাহ কমে গিয়ে কোষ মারা যেতে পারে।
  • এটি ত্বকে কালো বা নীলচে দাগ এবং জ্বালাপোড়ার অনুভূতি সৃষ্টি করে।
১২. দৈনন্দিন অভ্যাসের পরিবর্তন
  • শীতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে দীর্ঘসময় কাটানো।
  • পুষ্টিকর খাদ্য বা ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন এ এবং ই এর ঘাটতি।

শীতকালীন চর্মরোগ প্রতিরোধের উপায়

শীতকালীন চর্মরোগ প্রতিরোধের জন্য ত্বকের সঠিক যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শীতকালে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখা এবং ক্ষতি কমানোর জন্য কিছু সহজ এবং কার্যকরী উপায় রয়েছে। নিচে শীতকালীন চর্মরোগ প্রতিরোধের বিস্তারিত উপায় দেওয়া হলো:

১. ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন
  • ত্বকের শুষ্কতা রোধে:
    প্রতিবার ত্বক ধোয়ার পরে তৎক্ষণাৎ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
  • সঠিক ময়েশ্চারাইজার নির্বাচন:
    • শুষ্ক ত্বকের জন্য ভারী এবং তেলযুক্ত ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন।
    • সংবেদনশীল ত্বকের জন্য হাইপোঅ্যালার্জেনিক এবং সুগন্ধিবিহীন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
২. ঠাণ্ডা এবং শুষ্ক বাতাস থেকে রক্ষা করুন
  • বাইরে বের হওয়ার সময় শীতপ্রতিরোধী পোশাক, স্কার্ফ, টুপি এবং গ্লাভস ব্যবহার করুন।
  • ঠোঁট ফাটার হাত থেকে রক্ষা পেতে লিপ বাম বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন।
৩. গরম পানিতে গোসল এড়িয়ে চলুন
  • অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল করলে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয়ে যায়।
  • হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন এবং গোসলের সময় কমিয়ে আনুন (৫-১০ মিনিট যথেষ্ট)।
৪. সাবান এবং ক্লিনজারের সঠিক ব্যবহার
  • শীতে হার্শ সাবান বা ক্লিনজার এড়িয়ে চলুন।
  • ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা রক্ষার জন্য মৃদু এবং ময়েশ্চারাইজিং ফর্মুলা সমৃদ্ধ ক্লিনজার ব্যবহার করুন।
৫. সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন
  • শীতকালেও সূর্যের UV রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।
  • বাইরে যাওয়ার আগে ৩০ SPF বা তার বেশি সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
  • ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে ময়েশ্চারাইজার সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন বেছে নিন।
৬. রুম হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন
  • ঘরের বাতাস শুষ্ক হলে এটি ত্বকের শুষ্কতাকে বাড়িয়ে দেয়।
  • রুম হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করলে ঘরের বাতাসে আর্দ্রতা বজায় থাকে, যা ত্বকের জন্য উপকারী।
৭. পানি পান করুন
  • শীতে শরীরে পানির চাহিদা কম অনুভূত হলেও পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করলে ত্বক অভ্যন্তরীণভাবে আর্দ্র থাকে।
৮. পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করুন
  • ত্বকের জন্য পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন, যেমন:
    • ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার: গাজর, মিষ্টি আলু।
    • ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার: বাদাম, সূর্যমুখীর বীজ।
    • ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার: মাছ (স্যামন, টুনা), অলিভ অয়েল।
    • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল ও শাকসবজি: বেরি, পালং শাক।
৯. শীত উপযোগী পোশাক পরুন
  • তুলা বা সুতির আরামদায়ক পোশাক পরুন।
  • খসখসে বা চুলকানি সৃষ্টিকারী কাপড়, যেমন উল বা সিন্থেটিক কাপড় সরাসরি ত্বকে পরা এড়িয়ে চলুন।
১০. ত্বক নিয়মিত এক্সফোলিয়েট করুন
  • সপ্তাহে ১-২ বার মৃদু এক্সফোলিয়েটর দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করুন।
  • এটি মৃত ত্বক কোষ সরিয়ে নতুন ত্বকের উন্মোচন করতে সাহায্য করে।
  • এক্সফোলিয়েশনের পরে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
১১. ঠোঁটের যত্ন নিন
  • শীতে ঠোঁট বেশি শুষ্ক হয়ে যায়।
  • ঠোঁটে নিয়মিত লিপ বাম বা ভেসলিন ব্যবহার করুন।
  • ঘন ঘন ঠোঁট চাটা এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি ঠোঁট আরও শুষ্ক করে।
১২. দৈনন্দিন অভ্যাস পরিবর্তন করুন
  • শীতকালে অতিরিক্ত রোদ, শীতল বাতাস বা ধুলা-বালি থেকে ত্বক রক্ষা করুন।
  • ঠান্ডা পরিবেশে দীর্ঘ সময় কাটানো এড়িয়ে চলুন।
১৩. চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
  • যদি চর্মরোগের সমস্যা গুরুতর হয়, যেমন একজিমা বা সোরিয়াসিস বেড়ে যায়, তবে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিন।
  • সঠিক ওষুধ এবং ক্রিম ব্যবহারের জন্য চিকিৎসকের নির্দেশনা মেনে চলুন।

শীতকালীন চর্মরোগের ঘরোয়া সমাধান

“শীতকালীন চর্মরোগ: প্রতিরোধ এবং ঘরোয়া সমাধান” সম্পর্কে জেনে নিন কিছু প্রাকৃতিক সমাধান, যা সহজেই বাড়িতে করা যায়:

  1. নারিকেল তেল: শুষ্ক ত্বকে নারিকেল তেল ম্যাসাজ করুন। এটি ত্বকের গভীরে আর্দ্রতা যোগায়।
  2. অ্যালোভেরা জেল: ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে এবং ত্বক ঠান্ডা রাখতে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন।
  3. মধু: মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। এটি শুষ্ক ত্বকে প্রয়োগ করলে ত্বক নরম হয়।
  4. দুধ এবং মধুর প্যাক: দুধে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড ত্বককে মসৃণ এবং উজ্জ্বল করে। দুধ এবং মধু মিশিয়ে মুখে লাগান।
  5. গ্লিসারিন: গ্লিসারিন ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে কার্যকর। এটি শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে।
  6. লেবুর রস: লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। তবে এটি সরাসরি ব্যবহার করার আগে দুধ বা মধুর সঙ্গে মিশিয়ে নিন।

 

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন

শীতকালে ত্বকের যত্নে খাদ্যাভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিচে কিছু খাদ্যাভ্যাসের টিপস দেওয়া হলো:

  1. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার: ত্বক উজ্জ্বল রাখতে লেবু, কমলালেবু, আমলকী ইত্যাদি খান।
  2. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: মাছ, আখরোট এবং চিয়া সিড ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  3. জল বেশি পান করুন: শীতকালেও জল শরীরের ত্বক আর্দ্র রাখে।
  4. সবুজ শাকসবজি ও ফল: এগুলোতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক সুস্থ রাখতে সহায়ক।

 

শীতকালীন চর্মরোগের চিকিৎসা

যদি শীতকালীন চর্মরোগ খুব বেশি জটিল হয়ে যায়, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে একজিমা বা ফাঙ্গাল ইনফেকশনের ক্ষেত্রে উপযুক্ত চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।

উপসংহার

“শীতকালীন চর্মরোগ: প্রতিরোধ এবং ঘরোয়া সমাধান” সম্পর্কে সচেতনতা এবং সঠিক পদক্ষেপ ত্বককে শুষ্কতা, ফাটা এবং অন্যান্য সমস্যাগুলি থেকে রক্ষা করতে পারে। প্রতিদিনের ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করুন এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। ত্বককে সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখতে এই টিপসগুলো অনুসরণ করুন এবং শীতকালীন ত্বকের সমস্যা থেকে মুক্তি পান।

 

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

 

 সাধারণ জিজ্ঞাসা ও তার উত্তর (FAQ)

প্রশ্ন ১: শীতকালে কোন ধরনের চর্মরোগ বেশি দেখা যায়?

উত্তর:
শীতকালে সাধারণত যে চর্মরোগগুলো বেশি দেখা যায় সেগুলো হলো:

  • ত্বকের শুষ্কতা (Xerosis)
  • একজিমা
  • চুলকানি (Winter Itch)
  • ঠোঁট ফাটা
  • রোসেসিয়া
  • সোরিয়াসিস
প্রশ্ন ২: শীতকালে ত্বক শুষ্ক হওয়া থেকে কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়?

উত্তর:

  • নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
  • হালকা উষ্ণ পানিতে গোসল করুন (গরম পানি ব্যবহার এড়িয়ে চলুন)।
  • সাবান বা শাওয়ার জেলের পরিবর্তে হালকা ক্লিনজার ব্যবহার করুন।
  • বেশি সময় ধরে শীতের ঠাণ্ডা বাতাসে থাকার থেকে বিরত থাকুন।
  • হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন ঘরের বাতাস আর্দ্র রাখতে।
প্রশ্ন ৩: ঘরোয়া উপায়ে শীতকালীন চর্মরোগের চিকিৎসা কীভাবে করা যায়?

উত্তর:

  • নারকেল তেল: ত্বকের শুষ্কতা কমাতে ব্যবহার করুন।
  • অ্যালোভেরা জেল: ত্বকের আরাম এবং আর্দ্রতা বজায় রাখে।
  • গ্লিসারিন: ত্বকের শুষ্কতা প্রতিরোধে কার্যকর।
  • মধু: প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।
  • ওটমিল বাথ: একজিমা এবং ত্বকের চুলকানি কমাতে সহায়ক।
প্রশ্ন ৪: ঠোঁট ফাটা থেকে রক্ষা পেতে কী করবেন?

উত্তর:

  • নিয়মিত লিপ বাম ব্যবহার করুন (যাতে ভ্যাসলিন বা শিয়া বাটার থাকে)।
  • বেশি জল পান করুন।
  • শীতল বাতাস থেকে ঠোঁট ঢেকে রাখুন।
  • জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভেজানোর অভ্যাস পরিহার করুন।
প্রশ্ন ৫: শীতকালে একজিমা বাড়লে কী করবেন?

উত্তর:

  • চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার এবং স্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করুন।
  • ত্বক আর্দ্র রাখুন এবং ধুলোবালি এড়িয়ে চলুন।
  • পুষ্টিকর খাবার (যেমন: ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার) খান।
  • একজিমা হলে অতিরিক্ত চুলকানি এড়ানোর চেষ্টা করুন।
প্রশ্ন ৬: শীতকালে চুলকানি কমানোর সহজ উপায় কী?

উত্তর:

  • নারকেল তেল বা অ্যালোভেরা ব্যবহার করুন।
  • ঠাণ্ডা পানিতে কাপড় ভিজিয়ে চুলকানির স্থানে চেপে ধরে রাখুন।
  • ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পরামর্শ অনুসরণ করুন।
  • চুলকানির স্থানে ক্ষারযুক্ত সাবান বা রাসায়নিক ব্যবহার করবেন না।
প্রশ্ন ৭: শিশুর শীতকালীন চর্মরোগ প্রতিরোধে কী করবেন?

উত্তর:

  • শিশুদের জন্য হাইপোঅ্যালার্জেনিক ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
  • তাদের ত্বকে মৃদু এবং প্রাকৃতিক উপাদানসমৃদ্ধ সাবান ব্যবহার করুন।
  • ঠাণ্ডা থেকে সুরক্ষা দিতে উষ্ণ পোশাক পরান।
প্রশ্ন ৮: শীতকালে শরীরে পানি শূন্যতা প্রতিরোধে কী করবেন?

উত্তর:

  • প্রচুর পানি পান করুন।
  • তাজা ফলের রস এবং সুপ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
  • চা বা কফির পরিবর্তে হারবাল চা পান করুন।
প্রশ্ন ৯: চিকিৎসকের কাছে কখন যেতে হবে?

উত্তর:

  • ত্বকের সমস্যা গুরুতর হলে বা বারবার দেখা দিলে।
  • একজিমা বা সোরিয়াসিসের অবস্থা খারাপ হলে।
  • ত্বকে ফুসকুড়ি, রক্তপাত বা ব্যথা দেখা দিলে।

 

No comment yet, add your voice below!


Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *