শীতে সুস্থ থাকার কার্যকর টিপস-শীতকাল একটি সুন্দর সময়, তবে ঠান্ডা আবহাওয়া এবং ভাইরাসের সংক্রমণ শরীরের জন্য কিছু সমস্যা তৈরি করতে পারে। সর্দি, কাশি, শুষ্ক ত্বক, এবং শারীরিক দুর্বলতা এই মৌসুমের সাধারণ সমস্যা। তবে কিছু সহজ এবং কার্যকরী টিপস অনুসরণ করে আপনি শীতকালে সুস্থ থাকতে পারবেন। এই নিবন্ধে আমরা শীতে সুস্থ থাকার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস নিয়ে আলোচনা করব, যা আপনার শীতকালকে আরও আরামদায়ক এবং সুস্থ করে তুলবে।
শীতে সুস্থ থাকার কার্যকরী টিপস:
শীতকাল মানেই ঠান্ডা আবহাওয়া, শুষ্ক ত্বক, এবং সর্দি-কাশি হওয়ার ঝুঁকি। এই মৌসুমে সুস্থ থাকতে কিছু সহজ কিন্তু কার্যকরী অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। নিচে শীতে সুস্থ থাকার ১০টি কার্যকর টিপস দেওয়া হলো:
১. পর্যাপ্ত পানি পান করুন
শীতকালে তৃষ্ণা কম লাগে, কিন্তু শরীরের হাইড্রেশন ঠিক রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন। পানি শরীর থেকে টক্সিন বের করে এবং ত্বক আর্দ্র রাখে।
২. পুষ্টিকর খাবার খান
শীতকালে মৌসুমী ফল এবং সবজি খান যেমন কমলা, গাজর, মুলা, বিট, এবং পালং শাক। এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরকে ভেতর থেকে উষ্ণ রাখে।
৩. গরম পানীয় গ্রহণ করুন
গরম চা, লেবু-মধু মিশ্রিত গরম পানি, বা আদা চা পান করুন। এগুলো কেবল শরীরকে উষ্ণ রাখে না, বরং ঠান্ডা ও গলা ব্যথার ঝুঁকিও কমায়।
৪. শীতকালীন পোশাক পরুন
শরীর গরম রাখতে লেয়ারের পোশাক পরুন। মাথা, কান, এবং হাত ঢাকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঠান্ডা বাতাস থেকে রক্ষা পেতে স্কার্ফ, টুপি এবং গ্লাভস ব্যবহার করুন।
৫. ব্যায়াম করুন
শীতকালীন অলসতা দূর করতে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হালকা ব্যায়াম করুন। যোগব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করলে রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে এবং শরীর গরম থাকে।
৬. ত্বকের যত্ন নিন
শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। ঠোঁট ফাটার ঝুঁকি এড়াতে ভালো মানের লিপ বাম ব্যবহার করুন।
৭. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন
প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম সুস্থ থাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। ভালো ঘুম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং মস্তিষ্ককে সতেজ রাখে।
৮. সর্দি-কাশি প্রতিরোধে সতর্ক থাকুন
ঠান্ডা বাতাস বা ধুলোবালিতে বের হলে মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন। বাড়িতে এসে হাত ধুয়ে নিন। ঠান্ডা পানীয় বা বরফযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
৯. গুড় এবং মধু খাওয়ার অভ্যাস করুন
গুড় এবং মধু শীতে শরীর গরম রাখতে সহায়তা করে। এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়। সকালে চায়ের সাথে বা দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
১০. মানসিক চাপ দূর রাখুন
শীতে হতাশা বা ক্লান্তি এড়াতে নিজের জন্য সময় দিন। পরিবারের সাথে সময় কাটান, ভালো বই পড়ুন, অথবা শখের কোনো কাজে মন দিন।
শীতে সর্দি-কাশি প্রতিরোধে কার্যকরী টিপস:
শীতকালে সর্দি-কাশি একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, এটি এড়ানো সম্ভব কিছু সহজ নিয়ম ও অভ্যাস মেনে চলার মাধ্যমে। ঠান্ডা আবহাওয়া, ভাইরাসের সংক্রমণ এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার ফলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিচে সর্দি-কাশি প্রতিরোধে কিছু কার্যকরী টিপস দেওয়া হলো:
১. হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া হাতের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন। বিশেষত বাইরে থেকে ফিরে এবং খাবার খাওয়ার আগে হাত ধুয়ে নিন।
২. সঠিক পুষ্টিকর খাবার খান
শীতকালে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন কমলা, মাল্টা, লেবু, এবং টমেটো বেশি করে খান। এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া আদা, রসুন, এবং মধু নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করুন।
৩. উষ্ণ পানীয় পান করুন
গরম আদা চা, লেবু-মধু মিশ্রিত গরম পানি বা গরম স্যুপ পান করুন। এগুলো শরীরকে উষ্ণ রাখে এবং গলা ব্যথা ও সর্দি থেকে মুক্তি দেয়।
৪. পর্যাপ্ত পানি পান করুন
শীতে পানি কম পান করার প্রবণতা দেখা দেয়। কিন্তু শরীরকে হাইড্রেট রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি। হাইড্রেশন শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৫. শীত উপযোগী পোশাক পরুন
ঠান্ডা বাতাস থেকে বাঁচতে যথাযথ শীতকালীন পোশাক পরুন। মাথা, কান, এবং গলা ঢাকা রাখতে স্কার্ফ এবং টুপি ব্যবহার করুন।
৬. নিয়মিত ব্যায়াম করুন
ব্যায়াম রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে শক্তিশালী রাখে। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হালকা ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম করুন।
৭. হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন
শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় নাক ও গলা শুষ্ক হয়ে যায়, যা সর্দি-কাশির কারণ হতে পারে। ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন বা ঘরকে আর্দ্র রাখতে বালতিতে পানি রেখে দিন।
৮. ঠান্ডা জিনিস এড়িয়ে চলুন
শীতে ঠান্ডা পানীয়, বরফ মিশ্রিত খাবার বা খুব ঠান্ডা পরিবেশ এড়িয়ে চলুন। এটি গলা ব্যথা এবং সর্দি-কাশির ঝুঁকি বাড়ায়।
৯. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন
ভালো ঘুম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর অভ্যাস করুন।
১০. অপ্রয়োজনীয় ভিড় এড়িয়ে চলুন
ভাইরাস সংক্রমণ বেশি হয় ভিড় বা জনবহুল স্থানে। তাই অপ্রয়োজনীয়ভাবে জনসমাগম এড়িয়ে চলুন এবং বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করুন।
শীতকালে বাচ্চাদের সুস্থ রাখতে করণীয়:
শীতকাল বাচ্চাদের জন্য আনন্দের সময় হলেও, এই সময়ে তাদের শরীর বেশি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। ঠান্ডা আবহাওয়া, ভাইরাসের সংক্রমণ এবং সঠিক যত্নের অভাবে সর্দি, কাশি, ঠান্ডাজনিত অন্যান্য অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। বাচ্চাদের সুস্থ রাখতে সঠিক যত্ন এবং অভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিচে বাচ্চাদের শীতকালীন স্বাস্থ্য রক্ষায় করণীয় বিষয়গুলো উল্লেখ করা হলো:
১. শীত উপযোগী পোশাক পরান
- বাচ্চাদের গরম পোশাক পরিয়ে রাখুন।
- মাথা, কান, এবং হাত ভালোভাবে ঢেকে রাখুন।
- তাপমাত্রা অনুযায়ী লেয়ারের পোশাক দিন যাতে সহজে খুলে বা পরানো যায়।
২. সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করুন
- বাচ্চাদের সুষম খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করুন।
- শীতকালীন মৌসুমী ফল যেমন কমলা, মাল্টা, আপেল, এবং শাকসবজি খাওয়ান।
- দুধের সঙ্গে মধু মিশিয়ে দিতে পারেন, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, মাছ, এবং মুরগি খাওয়ানোর চেষ্টা করুন।
৩. পর্যাপ্ত পানি পান করান
শীতকালে পানি কম খাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। বাচ্চাদের পর্যাপ্ত পানি পান করানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। হালকা গরম পানি খাওয়াতে পারেন।
৪. ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন
- ঘর গরম রাখতে হিটার বা ব্লোয়ার ব্যবহার করুন।
- শুষ্ক পরিবেশ এড়াতে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন।
- ঘর নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন এবং ধুলো-ময়লা মুক্ত রাখুন।
৫. ব্যায়াম এবং শারীরিক কার্যকলাপ নিশ্চিত করুন
- বাচ্চাদের বাইরে খেলাধুলার সময় সীমিত করুন।
- ঘরের মধ্যে হালকা শারীরিক কার্যকলাপ বা খেলাধুলার সুযোগ করে দিন।
৬. সর্দি-কাশি হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিন
- বাচ্চাদের ঠান্ডা বা গলা ব্যথার লক্ষণ দেখলে গরম আদা চা বা মধু-লেবু মিশ্রিত পানি দিন।
- সর্দি-কাশি বাড়লে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৭. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন
- বাচ্চাদের প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।
- ঘুমানোর আগে হালকা গরম দুধ দিতে পারেন, যা তাদের ভালো ঘুমাতে সাহায্য করবে।
৮. ভাইরাস সংক্রমণ থেকে রক্ষা করুন
- ভিড় বা জনবহুল জায়গায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন।
- বাইরে গেলে বাচ্চাদের মুখে মাস্ক পরিয়ে দিন।
- বাচ্চাদের হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৯. ত্বকের যত্ন নিন
- বাচ্চাদের ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
- ঠোঁট শুষ্ক হয়ে গেলে ভালো মানের লিপ বাম ব্যবহার করতে পারেন।
১০. গরম পানিতে গোসল করান
- বাচ্চাদের গরম পানিতে গোসল করান, তবে পানি অতিরিক্ত গরম যেন না হয়।
- গোসলের পর দ্রুত শুকনো পোশাক পরান এবং ত্বকে তেল লাগিয়ে দিন।
শীতকালে সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় খাবার:
শীতকালে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়, তাই সঠিক খাবার গ্রহণ শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ সময়ে এমন খাবার খাওয়া উচিত যা শরীরকে গরম রাখতে সাহায্য করে, পুষ্টি জোগায়, এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। নিচে শীতকালে খাওয়ার জন্য আবশ্যক কিছু খাবারের তালিকা ও তাদের উপকারিতা তুলে ধরা হলো:
১. শীতকালীন ফল
শীতকালে পাওয়া মৌসুমী ফল শরীরকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ সরবরাহ করে।
- কমলা, মাল্টা, লেবু: ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা সর্দি-কাশি প্রতিরোধে সহায়তা করে।
- আপেল: শরীরকে শক্তি জোগায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- আমলকী: অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
২. সবুজ শাকসবজি
সবুজ শাকসবজি পুষ্টি এবং ফাইবারে সমৃদ্ধ, যা শীতকালে শরীর সুস্থ রাখতে সহায়ক।
- পালং শাক: আয়রন এবং ক্যালসিয়ামে সমৃদ্ধ, যা হাড়কে শক্তিশালী রাখে।
- বাঁধাকপি এবং ফুলকপি: ফাইবার, ভিটামিন কে, এবং ভিটামিন সি সরবরাহ করে।
- গাজর এবং বিট: ভিটামিন এ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, ত্বক ও দৃষ্টিশক্তির জন্য উপকারী।
৩. মসলা এবং ভেষজ উপাদান
শীতকালে বিশেষ কিছু মসলা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- আদা: ঠান্ডা এবং সর্দি-কাশি কমাতে সাহায্য করে।
- রসুন: প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক, যা রোগ প্রতিরোধে কার্যকর।
- হলুদ: প্রদাহ কমায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে।
৪. ড্রাই ফ্রুটস এবং বাদাম
ড্রাই ফ্রুটস এবং বাদাম শরীরকে প্রয়োজনীয় ক্যালোরি এবং ফ্যাট সরবরাহ করে।
- বাদাম, আখরোট এবং কাজু: ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন ই সরবরাহ করে।
- খেজুর: শরীর গরম রাখে এবং প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি সরবরাহ করে।
- কিশমিশ: হজমে সহায়তা করে এবং শক্তি বাড়ায়।
৫. গুড় এবং মধু
গুড় এবং মধু প্রাকৃতিক মিষ্টি হিসেবে কাজ করে এবং শরীর গরম রাখে।
- গুড়: আয়রন এবং খনিজ সরবরাহ করে, যা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সহায়ক।
- মধু: ঠান্ডা এবং গলা ব্যথা কমায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৬. উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার
প্রোটিন শরীরের শক্তি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- ডিম: প্রোটিন এবং ভিটামিন ডি সরবরাহ করে।
- মাছ: ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং প্রোটিনে ভরপুর।
- মুরগির স্যুপ: ঠান্ডা কমায় এবং শরীরকে গরম রাখে।
৭. গরম পানীয় এবং স্যুপ
গরম পানীয় এবং স্যুপ শরীরকে উষ্ণ রাখে এবং শীতকালের জন্য আরামদায়ক।
- আদা চা বা তুলসী চা: শরীর গরম রাখে এবং ঠান্ডা প্রতিরোধ করে।
- সবজির স্যুপ: পুষ্টি সরবরাহ করে এবং হজমে সহায়তা করে।
৮. পুরো শস্য এবং ডাল
পুরো শস্য এবং ডাল ধীরে হজম হয় এবং দীর্ঘ সময় ধরে শরীরকে উষ্ণ রাখে।
- গমের রুটি বা ব্রাউন রাইস: দীর্ঘ সময় ধরে এনার্জি সরবরাহ করে।
- মসুর এবং মুগ ডাল: প্রোটিন এবং ফাইবারে সমৃদ্ধ।
৯. দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার
দুধ এবং এর উপাদানগুলো হাড় শক্তিশালী করে এবং ত্বকের যত্নে সহায়তা করে।
- গরম দুধ: শীতকালে আরামদায়ক এবং ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে।
- পনির এবং দই: প্রোবায়োটিক সরবরাহ করে, যা হজমে সহায়ক।
১০. ওটস এবং কর্নফ্লেক্স
শীতকালে সকালের নাস্তায় ওটস বা কর্নফ্লেক্স খেতে পারেন। এটি ফাইবার সরবরাহ করে এবং দীর্ঘ সময় ধরে শরীর গরম রাখে।
উপসংহার
শীতকালে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খাবারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসব পুষ্টিকর এবং গরম রাখার খাবার শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে এবং শীতের কষ্ট লাঘব করে। সঠিক খাবার নির্বাচন করলে শীতকাল আরও উপভোগ্য হয়ে উঠবে।
………………………………………………………………….
………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………….
শীতকালে সুস্থ থাকার বিষয়ে সাধারণ প্রশ্নোত্তর (FAQ)
প্রশ্ন ১: শীতে সুস্থ থাকার জন্য কী কী খাবার খাওয়া উচিত?
উত্তর:
শীতে সুস্থ থাকার জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যেমন:
- মৌসুমী ফল: কমলা, মাল্টা, আপেল, আমলকী।
- সবজি: পালং শাক, গাজর, বিট, বাঁধাকপি।
- প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার: ডিম, মাছ, মুরগি।
- ড্রাই ফ্রুটস ও বাদাম: আখরোট, কাজু, কিশমিশ।
- গুড় এবং মধু।
প্রশ্ন ২: শীতকালে বেশি ঠান্ডা লাগা থেকে কীভাবে রক্ষা পাওয়া যায়?
উত্তর:
- পর্যাপ্ত শীতকালীন পোশাক পরুন।
- মাথা, কান, গলা এবং হাত ঢাকা রাখুন।
- গরম পানীয় পান করুন এবং ঠান্ডা পরিবেশ এড়িয়ে চলুন।
- ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
প্রশ্ন ৩: শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা এড়ানোর উপায় কী?
উত্তর:
- নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
- ঠোঁটের যত্নে লিপ বাম ব্যবহার করুন।
- শুষ্কতা এড়াতে হালকা গরম পানিতে গোসল করুন।
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ খাবার খান।
প্রশ্ন ৪: শীতকালে সর্দি-কাশি প্রতিরোধের উপায় কী?
উত্তর:
- নিয়মিত হাত ধুয়ে জীবাণু মুক্ত থাকুন।
- ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান।
- আদা চা বা গরম লেবু-মধু পান করুন।
- পর্যাপ্ত ঘুম এবং শারীরিক কার্যকলাপ বজায় রাখুন।
প্রশ্ন ৫: বাচ্চাদের শীতকালে কীভাবে সুস্থ রাখা যায়?
উত্তর:
- শীত উপযোগী পোশাক পরিয়ে রাখুন।
- পুষ্টিকর খাবার দিন এবং পর্যাপ্ত পানি পান করান।
- ঠান্ডা বাতাস এড়াতে বাইরে যাওয়ার সময় মাথা, কান, এবং গলা ঢেকে রাখুন।
- ঘরের পরিবেশ পরিষ্কার ও গরম রাখুন।
প্রশ্ন ৬: শীতকালে কী পরিমাণ পানি পান করা উচিত?
উত্তর:
শীতকালে পানি কম পান করার প্রবণতা দেখা যায়। তবে প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। শরীর হাইড্রেটেড থাকলে ত্বক ও শরীরের কার্যক্ষমতা ভালো থাকে।
প্রশ্ন ৭: শীতকালে ব্যায়াম করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর:
শীতকালে শরীর গরম রাখা এবং রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখতে ব্যায়াম অত্যন্ত জরুরি। প্রতিদিন ৩০ মিনিট হালকা ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম করলে শরীর সক্রিয় থাকবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
প্রশ্ন ৮: শীতকালে ঠান্ডা পানীয় বা আইসক্রিম খাওয়া কি এড়িয়ে চলা উচিত?
উত্তর:হ্যাঁ, ঠান্ডা পানীয় বা আইসক্রিম খেলে গলা ব্যথা বা সর্দি-কাশি হতে পারে। তাই এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
প্রশ্ন ৯: শীতকালে কি ভিড় বা জনবহুল স্থানে যাওয়া নিরাপদ?
উত্তর:
শীতে ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই অপ্রয়োজনীয় ভিড় বা জনবহুল স্থানে যাওয়া এড়িয়ে চলুন এবং বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করুন।
প্রশ্ন ১০: শীতকালে ঘুমানোর আগে কী করা উচিত?
উত্তর:
- হালকা গরম দুধ পান করুন।
- ত্বকে ময়েশ্চারাইজার লাগান।
- শীত থেকে বাঁচতে আরামদায়ক গরম পোশাক পরুন।
- পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।
2 Comments
Your blog is very informative. I just love it.
Thanks